সিরাজগঞ্জের পাট চাষীরা পাটজাগ দেয়া নিয়ে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। পাট কাটার ভরা মৌসুমেও সময় মতো প্রয়োজনীয় বৃষ্টি ও বন্যা না হওয়ায় জেলার খাল-বিল বা জলাভূমিতে নেই পাটজাগ দেয়ার মতো পর্যাপ্ত পানি। ফলে অনেক কৃষক জমি থেকে পাট কেটে যেখানে পানি আছে সেখানে জাগ দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছে গাড়িতে নয়তো কাঁধে করে। এর ফলে কৃষকের খরচ যেমন বাড়ছে তেমনি পাটের মান কমে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জেলার বিভিন্ন কৃষক ও কৃষি অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার কৃষকদের মাঝে সরকারি প্রণোদনার পাটের বীজ ও সার প্রদান করায় এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কৃষকরা বেশি পাট চাষ করেছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া বিভিন্ন উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের যেকোনো প্রয়োজনে সার্বিক পরামর্শ দিয়েছেন। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় পাটের ভালো ফলন হয়েছে বলেও জানা গেছে।
পাটগাছগুলো অন্যবারের চেয়ে এবছর অনেক পুষ্ট হয়েছে বলে একাধিক কৃষক জানিয়েছেন। তবে খালবিল জলাশয়ে পাটের জাগ দেবার এত পানির অভাবে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক।

কাজীপুরের প্রান্তিক কৃষক জালাল জানান, অন্যবছরগুলোতে নদীর কোলা, জলাশয় বা নিচু জমিতে পানি থাকে। ওইসব জমা পানিতে পাট জাগ দিতাম, কিন্তু এবছর তেমন পানি নাই। ফলে এক কিলোমিটারের বেশি দূরে পাটগাছ বয়ে নিয়ে নদীতে যেতে হয়েছে, এতে কামলা খরচসহ পাট পাহারা দেওয়ার অনেক খরচ বেড়েছে।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, অন্যবারের চেয়ে এবার পাটের ভালো ফলন হয়েছে। দামও ভালো। তবে ভারি বৃষ্টি নেই বিধায় জাগ দিতে কৃষকের খরচ বেড়েছে। এ অঞ্চলের মাটিগুলোতে বালির পরিমাণ বেশি থাকায় পানিধারণ ক্ষমতা কমে গেছে বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন জানান, গতবারের চেয়ে এবছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে পাট জাগ দিতে পানির অভাবে কৃষকরা হিমশিম খেলেও এখন প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পাট জাগ দিতে সমস্যা হবেনা।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন, সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিভিন্ন জাতের এ পাট চাষ করেছে। খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় এ চাষ বাড়ছে। এবার এ চাষে বাম্পার ফলনেরও আশা করা হচ্ছে। মাঠজুড়ে এ পাটের সবুজ সমারোহ সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকলে কৃষকরা এ চাষাবাদে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং কৃষকদের পাট চাষাবাদে নানা পরামর্শও দেয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
Tags: সিরাজগঞ্জে পাট